পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি-
তেতুলিয়ায় শালবাহান ইউপি চেয়ারম্যানকে জড়িয়ে একটি মহলের নানা অপপ্রচার,হেয় প্রতিপন্ন ও তার মানসম্মান ক্ষুন্ন করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল দুপুরে উপজেলার ৪ নং শালবাহান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম ইউপি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তার বিরুদ্ধে করা নানা অপপ্রচার, কুটশা রটনাসহ নানা অপপ্রচার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে তার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টাকারীদের নিন্দা ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী জানিয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সংবাদ সম্মেলনে এক লিখিত বক্তব্যে ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম বলেন,
গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় এক ইউনিয়ন পরিষদের বিরুদ্ধে খাজনার পরিমান বাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ তুলে মরিচ ও সুপারি কেনা-বেচা বন্ধ করে দেয় ব্যবসায়ীরা।
চাষিদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্যবসায়ীদের চাঁদার অতিরিক্ত মরিচ নিতে নিষেধ করায় ইউনিয়ন পরিষদসহ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণ ষড়যন্ত্র করা হয়েছে অভিযোগ করেন তিনি।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে বলেন, তেঁতুলিয়া উপজেলার মরিচ ও সুপারি কেনা- বেচার সর্ববৃহৎ হাট শালবাহান হাট। সপ্তাহের দুইটি হাটের (শনিবার ও বুধবার) মধ্যে প্রতি হাটে প্রায় ৩ থেকে ৪ কোটি টাকার মরিচ ও সুপারি কেনা-বেচা হয়। হাটে মরিচ, সুপারি, ভুট্টা, শাক সবজি, ধান, পাট সহ নানা ফসল কেনা-বেচা করেন চাষি এবং ব্যবসায়ীরা। দেশের নানা প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা করেন এখানে। তবে গত সপ্তাহ আগে কৃষক-চাষীদের কাছ থেকে ব্যবসায়ীরা নির্ধারীত ক্রয়ের থেকে অতিরিক্ত এক কেজি করে মরিচ সংগ্রহ শুরু করে। এতে লোকশানের পরার সঙ্কায় চাষিরা ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করলে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়। এর মাঝে হাট ইজারাদার রফিকুল ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের লোকজনকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করে। এর মাঝে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) শালবাহান হাটে ব্যবসায়ীদের নিয়ে মরিচ-সুপারি ক্রয় বন্ধ করে রাখার অভিনয় করে গণমাধ্যমকর্মীদের ডাকে।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, একই সময় নিজস্ব লোকজনকে নিয়ে পরিকল্পিত উত্তেজনামূলক পরিবেশ সৃষ্টি করে। যেটা পুরো তাদের সাজানো। আর সরকারি খাজনার টাকা ইজারাদারের মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসন পায়। এখানে ইউনিয়ন পরিষদের কোন হাত নেই। যদি এই ইউনিয়ন থেকে কোন পণ্য অন্য জেলায় ব্যবসায়ীরা নিয়ে যায়, সেই ক্ষেত্রে সে সকল ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে ইউনিয়ন পরিষদের গ্যাজেট অনুযায়ী একটা ট্যাক্স নেয়া হয়। এ ক্ষেত্রে কৃষকদের কাছ থেকে কোন ট্যাক্স নেয়া হয় না। চেয়ারম্যান বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে কৃষকদের বাজারে মরিচ ও সুপারি বিক্রয়ে খাজনা নির্ধারণ করে দেয় কেজি প্রতি ৩ টাকা। কিন্তু এর মাঝে আমার কাছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসায় এবং স্থানীয় প্রশাসন হিসেবে তাদের নির্দেশনা প্রদান করায় তারা পরিকল্পিত ভাবে ইউনিয়ন পরিষদের নাম করে নিজেরাই অতিরিক্ত টাকা উত্তোলন করে উল্টো ইউনিয়ন পরিষদের সুনাম খুন্ন করছে। এর সব কিছুর পেছনে হাট ইজারাদারের হাত রয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
আমি স্থানীয় ইউপি চেয়াম্যান হিসেবে উপজেলা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, কৃষকের কাছ থেকে মণ প্রতি এক থেকে দেড় কেজি মরিচ কর্তন না করা হয়। ৩ টাকার বেশি খাজনা যেন না আদায় করা হয়, এবং গরু প্রতি মসজিদ-মাদ্রাসার নামে অতিরিক্ত চাদা না নেয়া হয়। কারণ প্রতিবছরে প্রায় মসজিদ-মাদ্রাসার নামে এ হাট থেকে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা আদায় হয়। যার মধ্যে মাত্র ২/৩ হাজার টাকা মসজিদে দিয়ে ইজারাদাররা ভাগ করে নেন। তাই প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে এই ধরণের প্রতারণা এবং কৃষকের লোকসানে ফেলার বিষয়টি নজরে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান এই ইউপি চেয়ারম্যান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন প্যানেল চেয়ারম্যান শাহজাহান সিরাজ, ৩ নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য জাফর আলী, ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইকবাল হোসেন ও মহিলা ইউপি সদস্য আলেয়া বেগম প্রমুখ৷