যশোরের চৌগাছার ঐতিহ্যবাহী পীর বলুহ্ মেলা জমে উঠেছে।প্রতিবছরের ন্যায় ভাদ্র মাসের শেষ মঙ্গলবার মেলা শুরুর প্রথম দিন থেকে দর্শনার্থী ও পীর বলুহ (রঃ) ভক্তদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে।
এ মেলায় খুলনা সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, ঢাকা, বগুড়া, রাজশাহী, মাগুরা, ঝিনাইদাহ, নড়াইলসহ বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে হাজারের বেশি ষ্টল মেলায় বসানো হয়েছে।
মহাকবি মাইকেল মধূসুদনের কপোতাক্ষ নদীর তীরে যশোর জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলার হাজরাখানা গ্রামে পীর বলুহ মাজারকে ঘিরে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়।জাতীয় মেলা তালিকায় এ মেলা ২৯তম।
প্রায় ৩শ বছর ধরে বাংলা সনের ভাদ্র মাসের শেষ মঙ্গলবার আসলে এ মেলা শুরু হয়। চলে সপ্তাহব্যাপী।হাজরাখানা গ্রামের মারজন আলী বলেন, বলুর মাজার শরীফে এক শ্রেণির মানুষ গরু, ছাগল, হাস, মুরগী বিভিন্ন ফল মানত করে আর এ সময়ে তা পরিশোধ করে যায়।পীর বলু (রঃ)। তিনি আলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী।তিনি মুখে যা বলতেন তাই হতো।
কিন্তু তার জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জীবনের প্রতিটি মূহুর্ত ছিল রহস্যের জালে ঘেরা।
মাঠ চাকলা গ্রামের ৮৫ বছরের বৃদ্ধ হযরত মিয়া বলেন, তিনি চৌগাছার যাত্রাপুর গ্রামে এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ছুটি বিশ্বাস।তিনি বাবা দাদাদের কাছ থেকে শুনেছেন আজ থেকে প্রায় ৪শ বছর আগে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
পীর বলুহ দেওয়ানের কিংবদন্তী আছে তার বয়স যখন ১০/১২ বছর তখন তিনি একদিন তার বাবার কাছে আবদার করেন মাঠে গরু চরাতে যাবেন। পরে বাবার অনুমতি নিয়ে তিনি গরু চরাতে যান পাশেই ব্যাদন বিলের মাঠে।পীর বলুহ দেওয়ান তার গরুগুলো অপর একজনের ফসলের ক্ষেতে ছেড়ে দিয়ে একটি গাছের নিচে চুপ করে বসে ছিলেন। পরে ক্ষেত মালিক বিষয়টি জানতে পেরে গুরুর পাল নিয়ে খোয়াড়ের দিকে যায়।বলুহ এ অবস্থা দেখে গরুগুলোকে বক বানিয়ে দূরে একটি গাছে বসিয়ে রাখেন।
তারপর ছোট্ট বলুহ তার মামার বাড়ি হাজরাখানায় চলে আসেন।পীর বলুহ দেওয়ানের মামার আর্থিক অবস্থা ভাল না থাকায় তিনি অন্যের বাড়িতে দিন মজুরের কাজ করতেন।একদিন তার গৃহস্থ তাকে মাঠে গিয়ে সরিষা মাড়াই করতে বলেন, তিনি মাঠে গিয়ে সরিষা মাড়াই না করে সরিষার গাদায় আগুন ধরিয়ে দেন।গৃহস্থ জানতে পেরে মাঠে গিয়ে বলুহকে বকাবকি করেন। বলুহ হেসে গৃহস্থকে বলেন সরিষা নষ্ট হয়নি। পরে ছাই উড়িয়ে দেখেন সরিষার দানা ঠিকই আছে।
এমনি ভাবে তার আলৌলিক ঘটনা ঘটতে থাকলে বলুহ অত্র এলাকায় পীর হিসেবে পরিচিতি পান। বলুহ মেলা হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী একটি মেলা। এ বছর অন্য বছরের তুলনায় মেলার প্রত্যহ দিনই লাখ লাখ দশনার্থীর ভিড়।
স্টাফ রিপোর্টারঃ সাইবুর রহমান সুমন: