নিজস্ব প্রতিবেদকঃ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের কোম্পানি বিডি থাই ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ ব্যবহার করতে পারছে না। ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য অর্থ সংগ্রহ করলেও তা এখনো কাজে লাগাতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। দুই বছরের বেশি সময়ে আইপিও তহবিলের অর্থ ব্যবহার ব্যর্থ হয়ে আবার সময় চেয়ে আবেদন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। রোববার (২৬ মে) অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় একইসঙ্গে আইপিওর অর্থ ব্যবহারের ঘোষিত সময়সীমা বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায় ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য শেয়ারবাজার থেকে ১৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে কোম্পানিটি। শর্তছিল, আইপিওর মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ দুই বছরের মধ্যে করা হবে।
তথ্যে দেখা যায়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আইপিও অর্থ সম্পূর্ণরূপে ব্যয় করতে ব্যর্থ হয়েছে কোম্পানিটি। ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬১ শতাংশ অর্থ ব্যবহার করেছে কোম্পানিটি। ২০২২ সালের পর থেকে কোনো অর্থ ব্যবহার করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি।কোম্পানিটির কাছে আইপিওর অব্যবহৃত অর্থের পরিমাণ ৩ কোটি ৯৯ লাখ ৮২ হাজার টাকা। প্রসপেক্টাসে দেওয়া ঘোসণা অনুসারে, চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি মধ্যে আইপিওর অর্থের ব্যবহার শেষ হওয়ার কথা। কোম্পানিটি আজ এই সময়সীমা আগামী বছরেরে ২৫ মে পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিডি থাই ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কোম্পানি সেক্রেটারি হাবিবুর রহমান “স্টক নিউজ বিডি” বলেন, তিনি বলেন ডলারসংকট এবং মুদ্রাস্ফীতির কারণে কোম্পানিটি যে যন্ত্রপাতি আমদানি করার কথা ছিল। তবে এসব পণ্যের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বেড়েছে। এতে তাদের কোম্পানিটি প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানি করতে পারেনি। বাকি অর্থ ব্যবহারের জন্য আরও ছয় মাস সময় দরকার। এ জন্য ইতোমধ্যে বিএসইসির কাছে আবেদন করা হয়েছে। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নতুন যন্ত্রপাতি কেনার জন্য যে তহবিল বরাদ্দ করা হয়েছিল, ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে যন্ত্রপাতির দাম অনেক বেড়ে গেছে। যে কারণে বরাদ্দকৃত অর্থ যথেষ্ট নয়। বিডি থাই ফুড প্রায় ৭ কোটি ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে কোম্পানিটির যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম কিনতে একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছে।
কোম্পানিটি চীন থেকে একটি রোটারি ওভেন ও প্যাকেজিং মেশিন আমদানির জন্য ৮৪ লাখ ৫৭ হাজার টাকা, ভারত থেকে আরেকটি রোটারি ওভেন আমদানির জন্য ১৮ লাখ ৫৮ হাজার টাকা এবং চীন থেকে তিন সেট ছাঁচের যন্ত্রাংশ আমদানির জন্য ৬০ লাখ ৩৭ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে। বাকি ১ কোটি ২১ লাখ টাকা বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি যেমন- ২৫০ কেভিএ ডিজেল জেনারেটর, ৫০০ কেজি ক্ষমতাসম্পন্ন বয়লার সংগ্রহ এবং নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হবে।
সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিডি থাই ফুড চলতি অর্থবছরের ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর ’২৩) শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) কমেছে ৩১ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৪৭ পয়সা।
এদিকে বিডি থাই ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ১৭ পয়সা। গত অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ২২ পয়সা। এ ছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) হয়েছে ১৪ টাকা ১৪ পয়সা।
প্রতিষ্ঠানটির চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই প্রান্তিকে প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩১ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি ইপিএস ছিল ৪৭ পয়সা। উল্লিখিত সময়ে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা ৪৫ পয়সা।